Reviews by user: Tuhin Talukder

কল্লোল যুগের প্রায় অপরিচিত কিন্তু অনন্য কথাসাহিত্যিক জগদীশ গুপ্ত (১৮৮৬−১৯৫৭)। তিনি কল্লোল কালের হলেও কখনোই কল্লোলীয় সাহিত্য আন্দোলনের মূল ধারার সঙ্গে যুক্ত হন নি। এমনকি কখনো কল্লোলের অফিসেও যান নি, কেবল তাঁর লেখা পাঠিয়েছেন। কয়েকজন প্রকাশক ছাড়া অন্যদের সাথে তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয়ও ছিল না। প্রচারের বাইরে থেকে নিভৃতে, নির্জনে সাহিত্যচর্চা করে গেছেন। কিন্তু এমনই অভিনবত্ব তিনি নিয়ে এসেছিলেন যে, সমকাল এবং উত্তরকাল কেউই তাঁকে সাদরে গ্রহণ করতে পারে নি। কেবল বোদ্ধা সাহিত্যিক মহলে তাঁর অটুট গ্রহণযোগ্যতা ছিল। তিনি আধুনিক কথাসাহিত্যের নির্মাতা বা প্রথম আধুনিক গল্পকার। রবীন্দ্রনাথ−প্রভাতকুমার−শরৎচন্দ্রের সাহিত্য বলয়ের বাইরে গিয়ে তিনি অদৃষ্টপূর্ব এক সাহিত্য জগত নির্মাণ করেছেন।

হ্যান্স এন্ডারসনের গল্পগুলো ছেলেবেলা থেকে আমার কাছে ছিল ইউরোপের ঠাকুরমার ঝুলি। তাঁর গল্পগুলো ছেলেবেলায় একরকম আবেদন তৈরি করত। আজও ভিন্নরকম আবেদন এবং শৈশবের স্মৃতিচারণ সব নিয়ে হাজির হয় গল্পগুলো।

‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’ বইটি প্রথম যখন আমি পড়ি, তখন আমার নিজের বয়স ষোল সতের। গল্পের নায়ক পল বোমারের কাছাকাছি। আমি ভাবতেই পারি নি, যুদ্ধের সময় কিশোর বয়সী ছিল বলে একজনকে কী সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল।

রহস্যে ঘেরা মহাদেশ আফ্রিকা। বিশাল ভূখণ্ডটিতে অনেক দেশের মানুষের বাস। কিন্তু সমস্তটা নিয়ে যেন একটাই দেশ। আফ্রিকা নিয়ে আমাদের কৌতুহল প্রচুর কিন্তু খুব বেশি কিছু জানা নেই। আফ্রিকা বললে আমাদের মনে ভেসে ওঠে একটি নিপীড়িত জনপদ। যার মানুষেরা কখনো বহিঃর্শক্তি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, কখনো অপহৃত হয়ে দাস হিসেবে বিক্রি হয়েছে। আবার সেখানকার কালো মানুষেরা লড়াই করে সমঅধিকারও আদায় করে নিয়েছে। আফ্রিকার আছে বিচিত্র সংস্কৃতি, ভাষা এবং সাহিত্য। আফ্রিকার মানুষের আশা আকাঙ্খা স্বপ্নের প্রতিফলন তাদের বিচিত্র শিল্পে ও সাহিত্যে।

বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে নানাবিধ আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বইটির ব্যাতিক্রমী প্রকরণ নিয়ে মনোযোগী হয়েছেন অনেকেই। এটা গল্প, উপন্যাস না প্রবন্ধ এমন প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। তবে বইটিকে বিশেষ কোন তকমা পড়ানোর ব্যাপারে লেখকের আগ্রহ নেই। চেক লেখক মিলান কুন্ডেরা একটা ব্যক্তিগত ডিকশনারী লিখেছিলেন, যেখানে তিনি শব্দগুলোকে নিজের মত করে অর্থ করে নিয়েছিলেন। সেই বই থেকে শাহাদুজ্জামান অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন একটি ব্যক্তিগত বর্ণমালা বই লিখতে, যার নাম ‘বিসর্গতে দুঃখ’। এটাকে বড়দের বর্ণমালার বইও বলা যেতে পারে।