“আপনে যখন মনে করলেন, কোন বই পইড়্যা ফেলাইলেন, নিজেরে জিগাইবেন যে-বইটা পড়ছেন, নিজের ভাষায় বইটা আবার লিখতে পারবেন কি না। আপনের ভাষার জোর লেখকের মতো শক্তিশালী না অইতে পারে, আপনের শব্দভাণ্ডার সামান্য অইতে পারে, অথাপি যদি মনেমনে আসল জিনিসটা রিপ্রোডিউস না করবার পারেন, ধইর্যা নিবেন, আপনের পড়া অয় নাই”।
অনেকদিন ধরেই ভাবছি, একটা বই যে পড়লাম; আসলেই কি পড়লাম? আমার আত্মস্থ করার ব্যাপারটাকে কিভাবে মূল্যায়ন করা যায়? এই প্রশ্নগুলোর একটা উত্তর খুঁজে পেলাম আহমদ ছফার ‘যদ্যপি আমার গুরু’ বইটা পড়তে গিয়ে। উপরের কথাটা প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্য।
বইটা নিয়ে আলোচনার আসলে দুটি অংশ। এক. প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক এবং দুই. কলমে আহমদ ছফার মুনশিয়ানা।
একজন ব্যক্তিমানব প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক সাহেব আমাকে খুব নাড়া দিয়ে গেছেন। তাঁর সকল বক্তব্য যে আমি স্বতঃসিদ্ধভাবে মেনে নিয়েছি তা বলবো না কিন্তু একটা মানুষের এতগুলো দিক নিয়ে চিন্তাভাবনা এবং এসবের সকল ব্যাপারেই একটা স্পষ্ট বক্তব্য তৈরী হবার ব্যাপারটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সাহত্যি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সমাজ-ব্যবস্থা, ধর্ম, রাজনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর সমান জ্ঞান থাকার ব্যাপারটা আসলেই অবিশ্বাস্য। বলাই বাহুল্য, এই প্রচুর জ্ঞান লাভ করতে তাঁকে প্রচুর পরিমান পড়াশোনা করতে হয়েছে।
চাইলে হতে পারতেন অনেক কিছুই, করতেও পারতেন অনেক কিছুই। কিন্তু কোনা কিছুর ব্যাপারে তাঁর তেমন মোহ ছিলো বলে মনে হয়নি। এই জায়গাতে লেখকের সাথে সাথে আমারও মনে হয়েছে তিনি লেখালেখি কেন করলেন না? করলে বাংলা সাহিত্যটা আরও খানিকটা সমৃদ্ধ হতো নিঃসন্দেহে। অবশ্য এর উত্তরটা লেখক নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন – “যৌবনে যে মানুষ ট্রটস্কির থিয়োরি অব পার্মানেন্ট রেভ্যুল্যুশনের বাংলা এবং অবন ঠাকুরের ইংরিজি অনুবাদ করেছেন, সেই মানুষের পক্ষে অন্য কোন মামুলি বিষয়ে কাজ করা অসম্ভব ছিলো”।
যাই হোক, ব্যক্তিমানুষ প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে তাঁরই ছাত্রের লেখা এই বইটি পড়তে পারেন। শুধুমাত্র একজন জ্ঞানী মানুষের বিভিন্ন বিষয়ের ভাবনা সম্পর্কে জানার জন্যেও পড়তে পারেন এই বইটা।
লেখক হিসেবে আহমদ ছফা এইখানে খুব সতন্ত্র এবং পক্ষপাতহীন ছিলেন বলেই আমার মনে হয়েছে। প্রথম পুরুষের বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে উনি অনেক জায়গায় বেশ কিছু চরিত্রের ওপরেও আলোচনা করেছেন তবে তা আমার কাছে রচনার প্রয়োজন বলেই মনে হয়েছে।
NB: বই পড়ে তা নিয়া আলোচনা করার মতো যথেষ্ট বুদ্ধিবিচার আমার নেই। কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইনের এই সময়টাতে কিছু একটা করার জন্যেই আসলে এটা করা। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রার্থনা করছি।
আহমদ ছফার চোঁখে প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক
Moloy Adhikary https://bookshelvez.com//Attachments/BookCovers/52.jpgএকজন ব্যক্তিমানব প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক সাহেব আমাকে খুব নাড়া দিয়ে গেছেন। তাঁর সকল বক্তব্য যে আমি স্বতঃসিদ্ধভাবে মেনে নিয়েছি তা বলবো না কিন্তু একটা মানুষের এতগুলো দিক নিয়ে চিন্তাভাবনা এবং এসবের সকল ব্যাপারেই একটা স্পষ্ট বক্তব্য তৈরী হবার ব্যাপারটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সাহত্যি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সমাজ-ব্যবস্থা, ধর্ম, রাজনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর সমান জ্ঞান থাকার ব্যাপারটা আসলেই অবিশ্বাস্য। বলাই বাহুল্য, এই প্রচুর জ্ঞান লাভ করতে তাঁকে প্রচুর পরিমান পড়াশোনা করতে হয়েছে।
আহমদ ছফার চোঁখে প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক
https://bookshelvez.com//Attachments/BookCovers/52.jpg